দিল্লির আইন সভায় বোমা নিক্ষেপের ৯৩ বছর : ইতিহাসকে স্মরণ

8th April 2021 6:16 pm বর্ধমান
দিল্লির আইন সভায় বোমা নিক্ষেপের ৯৩ বছর : ইতিহাসকে স্মরণ


মধুসূদন চন্দ্র ( খন্ডঘোষ ) : আজ ৯৩ তম বৎসর।১৯২৯ সালে ৮ ই এপ্রিল  দিল্লীর আইন সভায় (লেজিসলেটিভ এ্যাসেম্লী) বোমা নিক্ষেপ  করে বৃটিশ সরকারের কুখ্যাত ১)পাবলিক সেফটি বিল ও ট্রেডাস ডিসপুট বিল এর প্রতিবাদ করে গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন।যে বোমা নিক্ষেপের প্রথম পরিকল্পনা হয়েছিল বর্ধমান এর খণ্ডঘোষের ওঁয়াড়ির বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তর জন্ম ভিটা বসে।১৯২৮ সালে ১৭ ডিসেম্বর উত্তর প্রদেশের কান পুরে বাগান বাড়িতে কুখ্যাত অত্যাচারী এ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার সাণ্ডারসন কে হত্যা করে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করেন।পাঞ্জাবে ভগৎ সিং এর নিজ গ্রাম খাটকার কালান এ জননী বিদ্যাবতী দেবীর কোলে আশ্রয় নেন।বৃটিশ পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ভগৎ সিং আর বটুকেশ্বর দত্ত চলে আসেন বটুকেশ্বর দত্তর নিজ গৃহ ওঁয়াড়ি। এখানে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে অতিবাহিত করেন ১৫ দিন।পুলিশের কাছে খবর যায়।ভগৎ সিং আর বটুকেশ্বর দত্ত ওঁয়াড়ির বাড়িতে আত্মগোপন করে আছে।বৃটিশ পুলিশে ছেয়ে যায় ওঁয়াড়ি।চিরুনি তল্লাসীতেও খুঁজে পায়নি দুই বিপ্লবীকে।তারা তখন পাশের নগেন্দ্র নাথ খগেন্দ্র নাথের বাড়ির আণ্ডারগ্রাউণ্ডে নিশ্চিন্তে বিরাজ করছেন।তাদের বুক দিলে আগলে রেখেছেন বৌদি পঙ্কজ রানী ঘোষ।ঘোষ বাড়িতে বৃটিশ পুলিশ চিরুনি তল্লাসি করেও খুঁজে পায়নি ওই দুই বিপ্লবী কে।এই সময় এই আন্ডারগ্রাউন্ডে বসেই প্রথম পরিকল্পনা হয়েছিল  পার্লামেন্টে বোমা মারার।বৃটিশকে উচিৎ শিক্ষা দেওয়া,ভারত ছাড়ার হুমকি এবং দুই কুখ্যাত বিলপাশে বাধা ও প্রতিবাদ।ইংরেজি পুলিশ বটুকেশ্বর দত্ত ও ভগৎ সিং কে না পেয়ে মিথ্যা সংবাদ ভেবে ওঁয়াড়ি ছেড়ে চলে গেলে দুই বিপ্লবী মহিলার ছদ্মবেশে বোঁয়াইচণ্ডী স্টেশন হয়ে বিভিন্ন ঘোর পথে উত্তর প্রদেশ ফিরে গিয়ে বিপ্লবী সাথীদের সাথে মিলিত হয়ে পার্লামেন্টে বোমা নিক্ষেপের  পাকাপাকি সিদ্ধান্ত করেন হিন্দুস্থান স্যোস্যালিষ্ট রিপাবলিক এ্যাসোসিয়েশনে।সিদ্ধান্ত হয় এই বোমাতে কোন লোক মরবে না।বৈলেওর কথায় জোরে শব্দ না করলে বধিরের কানে পৌঁছায় না।ভারতবর্ষকে জাগাতে,বৃটিশদের ভয়দেখাতে,তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার বার্তা দিতে এবং পাবলিক সেফটি বিল ও ট্রেডাস ডিসপুট বিল কে রুখে দিয়ে ভারতবর্ষ কে রক্ষা করতে সেদিন পার্লামেন্টে আইন সভার বোমা নিক্ষেপ করে প্রথম ইনকিলাব জিন্দাবাদ, সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক ধ্বনীতে শুধু দিল্লীর আইন সভা নয় সারা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়ে ভারতবর্ষে কুখ্যাত জন বিরোধী  আইন রুখে দিয়ে বৃটিশের হাত ধরা দিয়ে সারা ভারতবর্ষ কে জাগিয়ে প্রতিটি দেশবাসীকে স্বাধীনতার মন্ত্রে নতুন করে পাকাপাকি ভাবে দীক্ষা দিয়েছিলেন। আজ ৮ই এপ্রিল।২০২১ সাল পার্লামেন্টে বোম এক্সপ্লোরেশন এর ৯৩ তম বর্ষ।প্রনাম জানাই বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত ও বিপ্লবী শহীদ ভগৎ সিং এর চরনে শতকোটি। প্রনাম জানাই  প্রথম পার্লামেন্ট আক্রমনের পরিকল্লনার মাটি বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তর জন্ম ভিটা ও আত্ম গোপন করা আন্ডারগ্রাউন্ড ঘোষ বাড়ির মাটি এবং বিশ্ব গৌরবান্বিত ওঁয়াড়িকে।

 

লেখক পরিচিতি : সম্পাদক , শহীদ বটুকেশ্বর দত্ত স্মৃতিরক্ষা কমিটি 

 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।